দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সাথে জেলা নির্বাচন অফিসাররা নির্বাচনের সহায়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল তফসিল ঘোষণার পর এমন তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসারের বিষয়ে ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা করেছেন যে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার থাকবেন। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরের জন্য বিভাগীয় কমিশনার এবং এছাড়া ৬৪ জেলার জন্য ৬৪ জন জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

আর বাংলাদেশের বর্তমানে ৪৯৫টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও মহানগর এলাকা, ক্যান্টম্যান্ট এলাকা এবং যে সমস্ত এলাকা উপজেলাগুলো একাধিক আসনে বিভক্ত, সে সকল আসনে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

ইসি সচিব বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৪৯৫ জন, থানা নির্বাচন অফিসার ৫৬ জন, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার(ডিডিএলজি) ১৪ জন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ৮ জন, জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসার সিটি করপারেশন ১১ জন, ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার ৫ জন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ২ জন এবং সার্কেল অফিসার উন্নয়ন এক জন সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলা নির্বাচন অফিসাররা নির্বাচনের সহায়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

যারা নির্বাচনে না আসার ঘোষণা দিয়েছে, তাদের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না – এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বহির্ভূত বিধায় আজকের সভায় কোনো আলোচনাই হয়নি।

ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন আজ ২৬তম সভায় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত করেছে। সেখানে কয় তারিখে ভোটগ্রহণ শুরু হবে ইত্যাদি সব বলে দেওয়া হয়েছে। কারা কারা রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন, কারা প্রিজাইডিং অফিসার হবেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, নির্বাচন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ১ থেকে ১৮টি নির্দেশনামূলক পরিপত্র জারি করতে হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলো কখন কীভাবে জারি করতে হবে, কীভাবে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেরা দায়িত্ব পালন করবেন, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটেরা দায়িত্ব পালন করবেন- এসব বিষয়ে কমিশন আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। তার আলোকে আমরা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, আমরা তফসিল ঘোষণা করেছি। তফসিল অনুযায়ী রাজনৈতিক দল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের পদপ্রার্থিতা ঘোষণা করবে, মনোনয়ন দাখিল করবে, বাছাইয়ে উন্নীত হবে, প্রচারণায় যাবেন। তখন থেকে পদপ্রার্থীদের সকল ধরনের সমতল অবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করতে পিছপা হবে না।

পুন:তফসিলের কোনো সম্ভাবনা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যৎ কী হবে সেই প্রশ্ন যদি আজকে আমাকে করেন।…নির্বাচনের অনেকগুলো ধাপ আছে। সমস্ত কার্যক্রম ধাপে ধাপে গ্রহণ করা হয়। আপনারা বলছেন, নির্বাচন সময়কালীনের বিষয়টা। এখন নির্বাচনের পূর্বকালীন সময়। তফসিলের সময় থেকে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যখন যেটা প্রয়োজন হবে, কমিশন তখন সেই কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৮৩টি কেন্দ্র চুড়ান্ত করা হয়। এতে ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, দেশে বর্তমান মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। ইসির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর হিজড়া ভোটার ৮৫২। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।

By Nogor24